নোয়াখালীর জেলা জজ আদালত সড়কের পাশের ফুটপাতে নিজের এবং সন্তানদের জন্য শীতের কাপড় সংগ্রহ করতে এসেছিলেন রিকশাচালক আবদুর রহিম। তীব্র শীতের প্রস্তুতি ছিল না তাঁর। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কনকনে হিমেল হাওয়া বইছে। তাই রিকশা নিয়ে বের না হয়ে এসেছেন ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানে। বলেন, ‘শীতের কাফড় নাই। এবার অনো কেউ কম্বল দেয় ন। হোলাহাইনের ঠান্ডা লাগের। তাই টেয়া ধার করি গরম কাফড় কিনতাম আইসি।’
আজ সকাল থেকেই সূর্যের দেখা নেই উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীতে। চারদিক কুয়াশাচ্ছন্ন। অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত। শীতে কাবু সব শ্রেণি–পেশার মানুষ। উষ্ণতার খোঁজে ভিড় বেড়েছে শীতের কাপড়ের দোকানগুলোতে। বিপণিবিতান থেকে ফুটপাত সবখানেই শীতের কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেশি লক্ষ করা যায়।
আজ দুপুরে জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণত তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে সেটাকে শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। নোয়াখালী অঞ্চলের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে কখনো নামেনি। আজ জেলা শহর মাইজদীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল থেকে সূর্য দেখা যায়নি। আগামী কয়েক দিনেও এখানে সূর্য তেমন একটা দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সবখানে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে।
জেলা শহর মাইজদীর নোয়াখালী সুপারমার্কেট, হকার্স মার্কেটসহ ছোট–বড় অন্তত পাঁচটি বিপণিবিতান ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি বিপণিবিতানেই শীতের কাপড়ের দোকনে ক্রেতাদের কমবেশি ভিড় রয়েছে। চোখে পড়ার মতো ভিড় লক্ষ করা যায় ফুটপাতের দোকানগুলোতে। একইভাবে হকার্স মার্কেটের দোকানেও ভিড় কম নয়। ফুটপাতে কিংবা হকার্স মার্কেটের দোকানে বড় বিপণিবিতানের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে শীতের কাপড় পাওয়া যায়।
তিন বছরের ছেলে জাহিদকে কোলে নিয়ে হকার্স মার্কেটে শীতের কাপড় কিনতে এসেছেন সুলতানা আক্তার। তিনি বলেন, মৌসুমের শুরু থেকে খুব একটা শীত অনুভূত হয়নি। তাই ঘরে থাকা আগের বছরের পুরোনো শীতের কাপড় বাচ্চাদের পরিয়েছেন। কিন্তু এখন শীত অনেক বেশি। ঘরের ভেতরই গরম কাপড় গায়ে জড়িয়ে রাখতে হয় সারাক্ষণ। তাই বাচ্চাকে নিয়ে বেরিয়েছেন নতুন শীতের কাপড় কিনতে। কিন্তু কাপড়ের দাম আগের বছরের তুলনায় খানিক বেশি হওয়ায় বাড়তি চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে নোয়াখালী জেলার জন্য এরই মধ্যে ১০ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত কম্বল এরই মধ্যে নয়টি উপজেলায় ভাগ করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে এসব কম্বল বিতরণ করা হবে।